কীভাবে আপনার Skin Type Identify করবেন?

আপনার স্কিন টাইপের জন্য কোন টাইপ প্রোডাক্ট প্রয়োজন, তা বোঝার জন্য আপনি কি বারবার প্রোডাক্ট ট্রাই করতে করতে ক্লান্ত? আপনি একা নন, প্রায় অনেকেরই এই সমস্যা হয়। স্কিন টাইপ চেনাই হলো রাইট স্কিনকেয়ার রুটিনের প্রথম ধাপ। কিন্তু একটা গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০% বাংলাদেশি নারী তাদের স্কিন টাইপ না জেনেই ভুল প্রোডাক্ট ইউজ করে, যা স্কিনে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় স্কিনে অতিরিক্ত তেল, রুক্ষতা , শুষ্কতার সমস্যা দেখা যায়। স্কিন টাইপ জানা থাকলে, প্রোডাক্ট কেনার সময় ভুল হবে না, স্কিনের জন্য সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নিতে পারবেন।
কেন স্কিন টাইপ জানা দরকার?
ঢাকার আর্দ্র আবহাওয়ায় সকালে মেকআপ করলে গরমের দিনে কিছুক্ষণের মধ্যেই মেকআপ গলে যেতে পারে, কিন্তু আপনার বন্ধুর মেকআপ পুরো দিন থাকে। এর কারণ কি? আপনার বন্ধু তার স্কিন টাইপ সম্পর্কে সচেতন এবং সেই অনুযায়ী প্রোডাক্ট ইউজ করে। একটা গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৫% এরও বেশি বাংলাদেশি মেয়েরা তাদের স্কিন টাইপ চেনার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে এবং ভুল স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে।
স্কিন টাইপ বের করতে পারলে, স্কিনের সমস্যাগুলো সহজেই সল্ভ করা যায়। চলুন জেনে নেই, কীভাবে সহজেই আপনার স্কিন টাইপ চেনা যায়।
কিভাবে আপনার স্কিন টাইপ বুঝবেন?
১. প্রথমে ত্বক পরিষ্কার করুন
- মাইল্ড কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
- ময়েশ্চারাইজার বা কোনো প্রোডাক্টস ব্যবহার করবেন না।
- এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন, যাতে স্কিন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
২. এক ঘণ্টা পর ত্বকের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন।
তৈলাক্ত ত্বক
যদি আপনার ত্বক বিশেষ করে টি-জোন (কপাল, নাক ও থুতনি) এলাকায় চকচকে এবং তৈলাক্ত মনে হয়, তাহলে এটি তৈলাক্ত ত্বক। তৈলাক্ত ত্বকে বড় রোমকূপ, ব্রণ এবং ব্ল্যাকহেডের সমস্যা বেশি হয়।
শুষ্ক ত্বক
যদি মুখ টানটান বা খসখসে অনুভূত হয় এবং শুষ্ক ফ্লেক দেখা যায়, তবে এটি শুষ্ক ত্বক। শীতকালে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা বেশি হয়।
মিশ্র ত্বক
যদি টি-জোন তৈলাক্ত থাকে, কিন্তু গালের অংশ শুষ্ক বা স্বাভাবিক হয়, তবে এটি মিশ্র ত্বক। বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে এই স্কিন টাইপটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
সেনসিটিভ ত্বক
যদি আপনার ত্বক সহজেই লাল হয়ে যায়, চুলকায় বা নতুন প্রোডাক্ট ব্যবহারের পর জ্বালাপোড়া করে, তাহলে আপনার ত্বক সেনসিটিভ।
৩. ব্লটিং পেপার টেস্ট করুন
একটি ব্লটিং পেপার নিয়ে স্কিনের বিভিন্ন অংশে আলতোভাবে চাপ দিন।
- যদি অনেক তেল থাকে, তাহলে আপনার ত্বক তৈলাক্ত।
- যদি শুধু টি-জোন থেকে তেল আসে, তাহলে এটি মিশ্র ত্বক।
- যদি তেল না থাকে, তাহলে এটি শুষ্ক ত্বক।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী কী ব্যবহার করবেন?
তেলতেলে ত্বকের জন্য:
- ব্যবহার করুন:
- স্যালিসিলিক অ্যাসিড (২%)
- টি ট্রি অয়েল
- ক্লে মাস্ক
- স্যালিসিলিক অ্যাসিড (২%)
- এড়িয়ে চলুন:
- ভারী ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার
- অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য
- ভারী ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার
শুষ্ক ত্বকের জন্য:
- ব্যবহার করুন:
- হায়ালুরনিক অ্যাসিড
- শিয়া বাটার
- গ্লিসারিন
- হায়ালুরনিক অ্যাসিড
- এড়িয়ে চলুন:
- অ্যালকোহল ও ফ্র্যাগ্রেন্সযুক্ত পণ্য
- অতিরিক্ত অ্যাসিড
- অ্যালকোহল ও ফ্র্যাগ্রেন্সযুক্ত পণ্য
মিশ্র ত্বকের জন্য:
- ব্যবহার করুন:
- ময়েশ্চারাইজিং জেল
- হালকা সিরাম
- নিয়াসিনামাইড
- ময়েশ্চারাইজিং জেল
- এড়িয়ে চলুন:
- ভারী তেলযুক্ত প্রোডাক্ট
- ভারী তেলযুক্ত প্রোডাক্ট
সংবেদনশীল ত্বকের জন্য:
- ব্যবহার করুন:
- সেন্টেলা অ্যাসিয়াটিকা
- প্যানথেনল (Vitamin B5)
- অ্যালোভেরা
- সেন্টেলা অ্যাসিয়াটিকা
- এড়িয়ে চলুন:
- Frangnance যুক্ত পণ্য
- তীব্র অ্যাসিড বা কেমিক্যাল
- Frangnance যুক্ত পণ্য
একটি সমীক্ষায় (World Dermatology Survey, ২০২৩) দেখা গেছে, যে নারীরা নিয়মিত ত্বকের ধরন অনুযায়ী পণ্য ব্যবহার করেন, তারা ত্বকের সমস্যার ৪০%-৫০% পর্যন্ত উন্নতি দেখেন। সঠিক পণ্য বেছে নিলে ত্বকে অ্যালার্জি বা র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা ২৯% কমে যায়।
সঠিক স্কিনকেয়ার রুটিন তৈরির প্রথম ধাপ হলো আপনার ত্বকের ধরন জানা। আপনার ত্বকের ধরন সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারলে, সেই অনুযায়ী প্রোডাক্টস ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন। তাই আজই ব্লটিং পেপার টেস্ট করুন এবং আপনার স্কিনের জন্য পারফেক্ট প্রোডাক্ট বেছে নিন